ব্যবসায়ী কমিটি নামমাত্র সোনাইমুড়ীতে স্বর্ণ দোকান ডাকাতির চেষ্টা
সোনাইমুড়ী সংবাদদাতা : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী বাজারের মেইন রোডে গভীর রাতে দুলাল কুরী নামক স্বর্ণ দোকানের সাটার এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তালা ভেঙ্গে ডাকাতির চেষ্টা করে। এ ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার ভোর রাত ৩টা দিকে। সোনাইমুড়ী বাজার ব্যবসায়ী বৈণিক সমিতি নাম মাত্র, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও কার্জক্রম না থাকায় প্রায় ডাকাতি, চুরির আতঙ্কে আছে ২ হাজার ব্যবসায়ী। ৮ জন নৈশ প্রহরার নামে নিদ্রা তাদের চাকুরি। চুরির ঘটনার সঙ্গে নৈশ প্রহরীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে থানার তালিকায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সোনাইমুড়ী উপজেলা ২০০৫ সালে স্থাপন হওয়ার পর থেকেই সোনাইমুড়ী বাজারে ব্যবসায়ী সমিতি নামে কোন ধরনের সমিতির কার্যক্রম নেই। নাম মাত্রই ব্যবসায়ী সমিতি আছে। ২০১০ সালে এডফ কমিটি গঠন করেই চলে ২০১২ সাল পর্যন্ত। এডফ কমিটি সদস্যরা সভাপতি বিপ্লব, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মেহেদি হাসানকে কমিটি করে একটি কমিটি গঠন করে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও অদ্যবধি পর্যন্ত কোন ধরনের ব্যবসায়ী সমিতির কমিটি গঠন করেননি। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। বাজার ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন থেকে ডাকাতি ও চুরির আতঙ্কে আছেন। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বড় ও ছোট ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে সমাধান করার মত বৈণিক সমিতির পক্ষ থেকে কোন সদস্যের ভূমিকাই নেই।
দুলাল কুরীর স্বর্ণ দোকানের ম্যানেজার বিপুল কুরী জানান, প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার রাত ১১ টার দিকে দোকানের সাটারের সকল তালা বন্ধ করে দোকানের ভিতরে ঘুমিয়ে পড়ি। আনুমানিক রাত ৩টার দিকে একদল মুখোশধারী ডাকাত সাটারে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে, তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করলে দোকানের ভিতরে থেকে আমি চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
ডাকাতির বিষয়ে দুলাল স্বর্ণাকারের মালিক রত্মদীপ কুরী জানান, আমি বাজার ব্যবসায়ী কমিটি সভাপতির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাইনি। সাধারণ সম্পাদককে বলেছি, তারা আসলেই থানায় অভিযোগ করিব। সোনাইমুড়ী বাজারে ফল ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন জানান, মক্কা ষ্টোর চুরির ঘটনায় নৈশ্য প্রহরীদের আটক করা হলেও রহ্য জনক কারণে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ফল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে জানান, সোনাইমুড়ী বাজারে ডাকাতি ও চুরির ঘটনা ঘটেছে কাউছার মেডিকেল হল, সোনাইমুড়ী টেলিকম, নুর মেডিকেল হল, মক্কা ষ্টোর সহ ৮/১০ টি দোকানে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রতিমাসে সোনাইমুড়ী বাজারে অস্তিত্বহীন বণিক সমিতির নিয়োগকৃত ৮ জন নৈশপ্রহরীকে নিদিষ্ট অংকের মাসিক চাঁদা দিয়ে আসছে। তুবুও প্রতি রাতেই ডাকাতি ও চুরির আতংক থাকি আমরা।
এ বিষয়ে বৈণিক সমিতির সভাপতি বিপ্লব হোসেনকে বারং বার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বৈণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি সরজমিনে গিয়েছি পুলিশ কে বলেছি ডাকাতদের গ্রেফতার সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
বৈণিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মেহেদী হাসান জানান, আমি দায়িত্ব পেয়েছি সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে। এ দায়িত্ব আমাদেরকে দেন এডফ কমিটি। সোনাইমুড়ী বাজারে ৮ জন নৈশ প্রহরী আছেন তাদেরকে ৩ হাজর ৮শত থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিয়ে থাকি। এ বিষয়ে বলেন, আমি এ মাত্র শুনেছি আমাকে কেউ কিছুই বলে নি।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও বি.এন.পি সভাপতি আনোয়ারুল হক কামাল জানান, আমি ডাকাতির বিষয়টি শুনেছি।
সোনাইমুড়ী উপজেলা যুবগীগের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ভিপি নাছির জানান, বর্তমান বাজার কমিটির বিলুপ্ত করে নির্বাচনের মধ্যে পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড. রহিমা খাতুন যুগান্তরকে জানান, ডাকাতির বিষয়ে শুনেছি। আরও বলেন, সোনাইমুড়ী বাজারে ব্যবসায়ীদের কোন কমিটি না থাকায় সকল ব্যবসায়ীদের নিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার উদ্যোগ নিয়েছি।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশারাফ উল ইসলাম জানান, তিনি শুনেছেন এধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।