করোনায় বিপর্যস্ত জনজীবন, থমকে গেছে পৃথিবী-

আনোয়ার হোসেন আরজু: বৈশ্বিক করোনায় বিপর্যস্ত জন-জীবন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত প্রথম করোনা রোগী শণাক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তা গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে আছে।চীনের উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া এই ভাইরাস সময়ের সাথে সাথে ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে। সারাবিশ্বে এই করোনা মহামারি আকার ধারণ করলে এই ভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা করা হয়। এই মহামারি করোনা ছোঁয়াছে হওয়ায় একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে খুব সহজেই চলে যেতে পারে তথা একজন থেকে অন্যজন আক্রান্ত হতে পারে। করোনা সর্বপ্রথম উহানে আঘাত হানে। করোনা সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা না থাকায় তারা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করে, বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং এই করোনা ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস একসময় উহানকে বানিয়ে তোলে মৃত্যকূপ এবং তা পুরো চীনে ছড়িয়ে পড়ে ,লন্ডভন্ড করে দেয় চীনকে, কাঁপিয়ে দেয় চীনের অর্থনীতিকে। যার প্রেক্ষিতে চীন মাত্র পাঁচ (০৫) দিনে তৈরি করে ফেলে এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট (আইসিইউ) হাসপাতাল এবং দীর্ঘ কয়েকমাস পর চীন তাদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। যদিও এই করোনা ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বিশ্ব অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন চীনের দিকেই। অনেক কয়েকজন নোভেল জয়ী বিজ্ঞানীও বলেছেন যে করোনা ভাইরাস ল্যাবে তৈরি করা সম্ভব ,অনেকেই বলেছেন এটি চীনের ল্যাবেই তৈরি হওয়া ভাইরাস।
পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে ইতালি, আমেরিকাসহ ইউরোপের দেশগুলোতে এবং ইতালি, আমেরিকা,ফ্রান্স ও স্পেনসহ ইউরোপের দেশগুলোকেও বানিয়ে তোলে মৃত্যকূপ। পালাক্রমে ল্যাটিন আমেরিকাসহ এই বৈশ্বিক দূর্যোগ হানা দেয় বাংলাদেশ, ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলোতে। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় তাদের পড়তে হয়েছে নানাবিধ সমস্যায়। সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশের অনেক জায়গা পরিণত হয়েছে চীনের উহানে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের কিছু সাহসী উদ্যোগের মাধ্যমে তথা লকডাউন, এরিয়া ভিত্তিক লকডাউন, জেলাভিত্তিক লাডাউন ও অনেক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে তা বাংলাদেশ ধীরে ধীরে সামলে নিয়েছে। যদিও লকডাউনের ধাক্কায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা এবং যাতে চাকরিচ্যুত হয়েছে অনেক লোক। এই করোনার থাবায় বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ায় মানব সংসারে দেখা দিয়েছে অভাব অনটন বেড়েছে শিক্ষিত বেকারের হার। সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় না আসা মধ্যবিত্তরা রয়েছে সবচেয়ে বেশি কোনঠাঁসাই। তারা না পাচ্ছে সরকারি সহায়তা না পাচ্ছে কারো থেকে খুঁজে নিতে। এখন এই করোনাকালে মধ্যবিত্তের একটা অংশ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে না পেরে তারা এখন চক্ষুলজ্জা উপেক্ষা করে তারা এখন পিয়নের চাকরি হলেও করবেন এমনটাই মতপ্রকাশ করেছে অনেকে ।
বর্তমানে করোনার হটস্পট পুরো ভারত এখন করোনার স্বর্গরাজ্য, যেখানে প্রতিনিয়তই বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা, দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছে লাখের উপরে। বৈশ্বিক দূযোগ মহামারি করোনা থেকে বাঁচতে প্রয়োজন জনসচেতনতা। কেননা এখন পর্যন্ত এই মহামারির কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। সারাবিশ্বের অনেক হেভিওয়েট প্রতিষ্ঠান এর ভ্যাকসিন তৈরি করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে, সফলতার দ্বারপ্রান্তে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছে অনেক নামিদামী প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের নামকরা প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকও এই মহামারির ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে। অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হয়ে তারা ধারণা করছে আগামী দু’বছর যাবৎ থাকতে পারে এই করোনার ব্যপ্তি। আবার অনেকেই বলছেন, খুব শীঘ্রই করোনার ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছে বিশ্ব।
এখন পর্যন্ত নিজেকে সচেতন রাখতে মেনে চলতে হবে সরকারি নির্দেশনা। যেমন ঘরের বাহিরে গেলে মাক্স ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি।
আসুন নিজে সচেতন হই অন্যকে সচেতন করি। আপনাকে সচেতন করা সরকারের দায়িত্ব, আপনাকে সচেতন রাখা আপনার হাতে, আর আপনাকে সুস্থ রাখা স্বয়ং খোদার হাতে।